সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুমারি ত্রুটিমুক্ত ও সফল করতে দেশে এই প্রথমবারের মতো গণনা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১১ সালে আদমশুমারি হয়। এর ১১ বছরের বেশী সময় পর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ডিজিটাল পদ্ধতিতে সপ্তাহব্যাপী আদমশুমারি পরিচালনা করছে।

আদমশুমারির জন্য মাঠ-পর্যায়ে ১৫-২১ জুনের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা হবে, যা ‘শুমারি সপ্তাহ’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই আদমশুমারিকে দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত কারণ, সঠিক পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য আদমশুমারির তথ্য ও পরিসংখ্যান খুবই জরুরি।

 

প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন
প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন

সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব মো. আশরাফ সিদ্দিকী বিটু বাসস’কে জানান, প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বহুল প্রতীক্ষিত আদমশুমারির উদ্বোধন করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আদমশুমারির প্রশ্নপত্রে প্রায় ৩৫টি প্রশ্ন থাকবে যেখানে গণনাকারী ট্যাব ব্যবহার করে মানুষের কাছ থেকে প্রশ্নের উত্তর নেবেন।ড. আলম বলেন, জনগণকে আদমশুমারির আওতায় আনার জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টির সব ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি যাতে গণনা প্রক্রিয়ার আওতায় আসে এবং কেউ যাতে বাদ না পড়েন সেদিকেও জোর দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, একবার আদমশুমারি সম্পন্ন হলে প্রায় ২ কোটি লোক অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি ২০২২ প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গৃহহীন ও অসহায় মানুষের তথ্য সংগ্রহের জন্য ইতিমধ্যে শহর ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই প্রায় ২,০০০ নিদিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে।তিনি জানান, যখন ডাটা এনক্রিপ্টেড আকারে থাকবে তখন বিবিএস ছাড়া আর কারোই আদমশুমারির সার্ভারে প্রবেধিকার থাকবে না। এছাড়াও হ্যাকিংয়ের সম্ভাব্য কোনো প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ডাটার জন্য ব্যাক আপ থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন
প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনাকারীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন এবং কোনো অনুরোধ থাকলে গণনাকারীরা রাতেও মানুষের বাড়িতে যাবেন।এছাড়া অনাবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকেও মৌলিক তথ্য আদমশুমারিতে সংগ্রহ করা হবে।অন্য এক প্রশ্নের জবাবে দিলদার বলেন, তারা তিন মাসের মধ্যে আদমশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন দেয়ার চেষ্টা করবেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন।

আদমশুমারি সফল করার জন্য প্রায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন গণনাকারী, ৬৩ হাজার ৫৪৮ জন সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন আইটি সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন জোনাল অফিসার, ১৬৩ জন জেলা আদমশুমারি সমন্বয়কারী এবং প্রায় ১২ জন বিভাগীয় আদমশুমারি সমন্বয়কারী বিভিন্ন স্তরে শুমারি কার্যক্রমে সক্রিয় থাকবেন।

বিবিএস সদর দফতরে ইতোমধ্যেই একটি অত্যাধুনিক কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে যে কেউ ০৯৬০২৯৯৮৮৭৭ নন্বরে ফোন করে আদমশুমারি সংক্রান্ত যে কোন তথ্য পেতে পারবেন।
দেশের প্রথম জনসংখ্যা ও আবাসন শুমারি ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় এবং তারপর দ্বিতীয় গণনা ১৯৮১ সালে, তৃতীয় গণনা ১৯৯১ সালে, চতুর্থ গণনা ২০০১ সালে এবং পঞ্চম শুমারি ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন
প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন

আদমশুমারি পরিচালনার জন্য ওয়েব-ভিত্তিক ইন্টিগ্রেটেড সেন্সাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) এবং ভৌগোলিক তথ্য সিস্টেম (জিআইএস) ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে এবং গণনা এলাকার জন্য নিয়ন্ত্রণ মানচিত্রও প্রস্তুত করা হয়েছে।

এই আদমশুমারিতে ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা ভিত্তিক ডিজিটাল মানচিত্র ব্যবহার, ডিজিটাল ডিভাইস ‘ট্যাব’ ব্যবহার করে কম্পিউটার সহায়ক পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের সকল পরিবারের তথ্য একযোগে সংগ্রহ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন
প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন

আদমশুমারি কার্যক্রমের অধীনে জনসংখ্যাগত এবং আর্থ-সামাজিক তথ্য যেমন পরিবারের সংখ্যা এবং তাদের ধরণ, বাড়ির মালিকানা, পানীয় জলের প্রধান উৎস, টয়লেট সুবিধা, বিদ্যুৎ সুবিধা, রান্নার জন্য আগুনের প্রধান উৎস, অর্থনৈতিক কার্যক্রম, অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স, বয়স, পরিবারের সদস্য, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, প্রতিবন্ধিতা, শিক্ষা, কাজ, প্রশিক্ষণ, মোবাইল ফোন, এবং ইন্টারনেট ব্যবহার, ব্যাংক/মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী, জাতীয়তা এবং বিভিন্ন জেলাভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

আরও দেখুনঃ 

Leave a Comment